একটা প্রেমের গান

Màu nền
Font chữ
Font size
Chiều cao dòng

একটা প্রেমের গান
লেখা- #AbiarMaria

বাইরে ঝুম বৃষ্টি হচ্ছে। আমি দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাউন্টার টেবিল মুছছি। আরও দুজন ওয়েইটার আছে, ওরা কিছু দূরে বসে আছে। এই বৃষ্টির মাঝে তেমন কোনো কাস্টমার নেই আমাদের কফি হাউজে। বৃষ্টি যখন আচমকা আকাশ থেকে ঝরতে শুরু করে, তখন মানুষ যে যেখানে পারে ঢুকে যায় পানি থেকে নিজেকে বাঁচাতে। তবে বৃষ্টি যদি অনেকটা সময় ধরে চলতে থাকে, তবে বেশিরভাগ মানুষ সেই বৃষ্টির পানিকে তোয়াক্কা না করেই গন্তব্যে রওনা দেয়।

আমাদের কফি হাউজটা মেইন রোড থেকে কিছুটা ভেতরের দিকে অবস্থিত। আবাসিক এলাকার ভেতর তেমন একটা কফি হাউজ নেই, অন্তত আশপাশের এক কিলোমিটার এর মাঝে এটাই একমাত্র কফি হাউজ, তবুও কাস্টমারের অভাব এখানে। মানুষ আসলে ঘরের কাছে ঘোরা না, অন্তত এই শহরের মানুষগুলো তো নয়ই। তাই এই কফি হাউজ সামলাতে খুব বেশি ওয়েইটার নেই। অতিরিক্ত কর্মচারী রাখলে খরচটাও অতিরিক্ত হবে। সেই অতিরিক্ত টাকা দিয়ে কফি হাউজের ডেকোরেশন নান্দনিক করা হয়েছে। পুরো কফি হাউজ কাঠের ডিজাইন করা। এখানে প্রবেশ করে যে কারো মনে হবে সে একটা কাঠের তৈরি বাড়িতে এসে পড়েছে। আসবাবপত্রও তাই কাঠের তৈরি। তবে রঙটা বাদামী হওয়ায় এখানে একটু আলোর ব্যবস্থা বেশি করতে হয়েছে। বাইরে যখন টাক ফাটা রোদ থাকে, তখনই এখানে আলো লাগে, তার উপর এখন তো আরও আঁধার আঁধার ভাব। অবশ্য কাস্টমাররা আলো আধারীর এই খেলা বেশ পছন্দ করে। আমি পাশের উঁচু টুলে বসে সারাদিনের হিসেব কষার চেষ্টা করলাম যদিও এখনো ক্লোজিং টাইম আসেনি। আমি চেষ্টা করছি বের করতে, আজ এখন পর্যন্ত লাভ নাকি লস হয়েছে। এ সময় মাইদুল, যে কিনা আমার ডানদিকের একটা চেয়ারে বসে ছিল অর্ডারের অপেক্ষায়, সে আসলো। টেবিলে টোকা দিয়ে বলল,
"তিন নাম্বার টেবিলের ম্যাম ফাইনালি একটা কফি চেয়েছে"
"কোনটা দিব?"
"এসপ্রেসো"

আমি পেছন ফেরে এক মিনিটের মাঝে এক কাপ এসপ্রেসো কফি ওর হাতে দিলাম। আঙুলে লেগে থাকা অল্প একটু কফি গায়ের নীল সাদা স্ট্রাইপ এপ্রোনে মুছে ফেললাম। কফি হাউজে কাজের আগে আমার কফি নেশা ছিল। এখন সারাদিন কফির মাঝে ডুবে থেকে থেকে কফির প্রতি আর আকর্ষণ কাজ করে না। সব সময় যে নেশাকে পেশা হিসেবে নিতে নেই, আমার এই পরিবর্তন তার প্রমাণ। আমি আমার আগের কাজে মনোযোগ দিলাম।

এ সময় সাত নাম্বার টেবিল থেকে দুটো ছেলে হৈহৈ করে উঠল। ওদের আরেক বন্ধুকে নিশ্চয়ই কোনো খেলায় হারিয়ে খুব খুশি বাকি দুজন। ওদের দেখে আমার বন্ধুদের কথা মনে পড়ল। আজকাল আর আড্ডা দেয়ার সুযোগ সেভাবে হয় না, ভালোও লাগে না। সবার থেকে নিজেকে যেদিন আলাদা করা শুরু করেছি, সেদিন থেকে আড্ডা বাজী বাদ দিয়েছি। অনেকবার ওরা আমাকে ডেকেছে, সাথে থাকতে চেয়েছে। আমিই চাই নি সবাই সাথে হৈহৈ করতে। আগের মত কোনো কিছুতেই অনুভূতি পাচ্ছিলাম না, পেতে ইচ্ছাও করেনি। আমি যে তখনই মরে গেছি, আমার আত্মা আমার দেহ থেকে চলে গেছে, তা আমি ভালো ভাবে বুঝেছিলাম। শুধু আমার দেহ চাবি দেয়া পুতুলের মত কাজ করে যাচ্ছে বলে আজও বেঁচে আছি।

মাইদুল আবার এসে টেবিলে টোকা দিয়ে আমার ধ্যান ভঙ্গ করে দিল। আমি মুখ তুলে চাইতে ইশারা করে বলল,
"ম্যাম বলেছে কফির স্বাদ ভালো হয়নি, বদলে দিতে"
আমি দ্বিরুক্তি না করে কফি ফেলে দিয়ে আবারও কফি ভরে দিলাম। এবার নতুন করে সবটা বানিয়ে দিলাম। কিছুক্ষণ পর সালেহ এসে বলল,
"এক নাম্বার টেবিলে একটা চকো ক্রিম ফাজ চাচ্ছে"

আমি সেটা একটা হাফ পিরিচে করে ওর হাতে দিলাম। এক নাম্বার টেবিলে এক দম্পতি বসেছে। মেয়েটা লাল রঙের শাড়ি পরে আছে, চুল গুলো হাইলাইট করে স্ট্রেইট করা, তবে মুখে হালকা মেকাপ। ছেলেটা মুগ্ধ হয়ে মেয়েটাকে শুধু দেখে যাচ্ছে। এরা নববিবাহিত দম্পতি, তা যে কেউ দেখলেই বলে দিতে পারবে। এক মাত্র নতুন বিয়ের পর একজন পুরুষ তার স্ত্রীকে মন ভরে বারবার দেখে। কিছুদিন পারোনোর পর সব শেষ হয়ে যায়। তবুও আমি যখনই কোনো দম্পতি দেখি, তখনই দোয়া করি, জীবন শেষ দিন পর্যন্ত যেন এরা নিজেদের প্রথম দিনের মতো ভালোবাসে। আমার মত পাপীর দোয়া কি কবুল হয়?

মিনিট পাঁচ পর মাইদুল বিরক্ত হয়ে এসে বলল,
"এবারও নাকি কফি ভালো হয়নি! সে তোমাকে ডাকছে। কি নাটক লাগালো ভাই আল্লাহ জানে!"

আমি ক্যাশের ড্রয়ারে তালা মেরে হাত পেছনে নিয়ে তিন নাম্বার টেবিলের পাশে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার উপস্থিতি টের পেয়ে সে মুখ না তুলেই বলল,
"কি কফিশপ দিয়েছেন যে ঠিকঠাক কফি বানানো হয় না?"
"ম্যাম, আমি কি জানতে কি সমস্যা আছে?"
"ইউ ওয়ান্ট টু নো?! টেস্ট ইট এন্ড নো ইট বাই ইউরসেল্ফ! টেস্ট ইট নাও!"

তার উঁচানো কন্ঠে কফিশপের সবাইই ঘাড় ঘুরিয়ে তাকালো। আমার কিছুটা বিব্রত লাগছে। মাইদুলকে ইশারা করতে সে একটা চামচ এনে আমাকে দিল। আমি কাপ নিয়ে চামচ দিয়ে স্বাদ নিলাম। নাহ, সব ঠিক আছে। কাপ তার সামনে রেখে বললাম,
"সব তো ঠিক আছে ম্যাম। আপনি কি জানাবেন আপনার কোথায় সমস্যা হচ্ছে?"
"কোথায় স্পুন, দেখি? আমাকে দিন!"
আদেশের সুরে সে আমার হাত থেকে এঁটো চামচ নিয়ে কফি মুখে দিল। তারপর সেই চামচ কফিতে নেড়ে বলল,
"এখন ঠিক আছে, আপনি যান"

আমি ক্যাশ কাউন্টারের দিকে রওনা দিতেই মাইদুলের সাথে চোখাচোখি হলো। মাইদুলের চোখে প্রশ্ন, আমার চোখে ক্লান্তি। আমি চুপচাপ নির্ভেজালভাবে বসে থাকলাম।

তিন নাম্বার টেবিলের মেয়েটার পুরো শরীর বৃষ্টির পানিতে ভেজা। ওর কাপড় থেকে টুপটুপ করে পানি পড়ে চেয়ার নিচে খানিকটা পানি জমে আছে। মাইদুল একটু আগে পানি মুছলেও আবার জমেছে। বৃষ্টির পানিতে মুখের দুপাশ ভেজা চুলের কয়েক গোছা ঝুলছে,বাকি গুলো মাথায় চাপানো ওড়নার আড়ালে। শ্যামলা চামড়ার হলেও ওর গালে একটা লালচে আভা আছে, আর ঠোঁট জোড়া রক্ত লাল। অবশ্য সেটা সে লিপস্টিকের রঙ, তা দেখলেই বোঝা যায়। ওর গায়ের কালো জামাটা শরীরের সাথে সেঁটে আছে। তবুও মেয়েটা ভাবলেশহীন ভাবেই বসে আছে, যেন নিজেকে নিয়ে ওর কোনো ভাবনা নেই। আমিও আমার কাজ করে যাচ্ছি।

এরপরের কয়েক ঘন্টায় বেশ কিছু কাস্টমার এসেছে, আবার খাওয়া দাওয়া এবং ভালো একটা সময় কাটানো শেষে চলে গিয়েছে। তবে মেয়েটা নড়েনি। ও কফি অর্ডার এক ঘন্টা পর একটা বার্গার চেয়েছে। সেই বার্গার নিয়েও একই অভিযোগ জানানোর পর আমি সেখানে গেলাম। আমার দিকে বার্গার এগিয়ে বলল,
"খেয়ে দেখুন কি দিয়েছেন এর ভেতর! খান বলছি!"
আমি মাইদুলকে দিয়ে একটা ফোর্ক আর ছুরি এনে এক পিস কেটে মুখে পুরে বলেছি,
"সব ঠিক আছে ম্যাম"
"ফোর্কটা দিন এদিকে!"
আমার হাত থেকে ফোর্ক নিয়ে সে ঐ ফোর্ক দিয়ে বার্গার মুখে পুরে বলল,
"হ্যাঁ এখন ঠিক আছে"
আমি আর কিছু না বলে নিজের যায়গায় চলে আসি।

এর এক ঘন্টা পর সে অর্ডার করে এক বোতল পানি। সেই পানিও নিয়েও অভিযোগ, পানি থেকে নাকি নারিকেলের পানি মত স্বাদ পাওয়া যাচ্ছে। আমি একটা গ্লাসে নিয়ে যখন সব ঠিক বললাম, সে তখন আমার গ্লাস নিয়ে তাতে পানি ঢেলে মনের সুখে খেয়ে নিল। মাইদুল এসব দেখে আমার কাছে এসে বলল,
"বস, কাহিনী কি?!"
"কোনো কাহিনী নাই"
"না বস, এটা আমি বিশ্বাস করতে পারলাম না। মেয়েটা প্রতিবার আপনার মুখ দেয়া জিনিসে খাচ্ছে। মেয়েটা কি আপনাকে পছন্দ করে?"
আমি কঠিন দৃষ্টি নিক্ষেপ করতেই ও কিছুটা দমে গেল। আমি চোখ সরিয়ে ফেলার পর ও বলল,
"বস, মেয়েটা আপনার জন্য অপেক্ষা করতেছে মনে হয়। আপনি উনারে কষ্ট দিয়েন না"
"নিজের কাজে যাও মাইদুল!"
আমার কঠিন কন্ঠস্বরে মাইদুল সরে গেল।

কফি হাউজ বন্ধ করে দেই রাত নয়টায়। শহরের বুকে এটা খুব বেশি রাত না হলেও আমি এরচেয়ে বেশি সময় এটা খোলা রাখি না। আজও এরকম সময়েই বন্ধ করব, যদিও ঐ একটা মেয়েই রয়ে গেছে। আমার নিজস্ব কাজ থাকে বলে রাত নয়টার মাঝে শপ বন্ধ করতে হয়। হ্যাঁ, এই কফিশপ আমার নিজেরই। এজন্য এখানে সব আমার ইচ্ছামত হয়, আমাকে প্রশ্ন করার কেউ নেই। মাইদুল আর সালেহ চলে গেছে একটু আগে। আমিও সব গুছিয়ে আলো দুটো নেভানো বাকি রেখে বললাম,
"আমাকে দোকান বন্ধ করতে হবে"
মানুষটা বাইরে গিয়ে দাঁড়ালো। এখন আর বৃষ্টি নেই, তবে পিচ ঢালা চকচকে রাস্তায় উপর বৃষ্টির শেষ ফোঁটা গুলো আটকে আছে। আমি সব আলো নিভিয়ে দরজায় তালা ঝুলিয়ে শাটার টেনে দিলাম। পকেটে হাত ঢুকিয়ে রওনা দিতেই সে পেছন থেকে বলল,
"বিল নিবেন না?"
আমি ঘুরে দাঁড়ালাম।
"প্রয়োজন হবে না"
"তাহলে আপনার কিসের প্রয়োজন হয় বলবেন?"
আমি কিছু না বলে হাসলাম।

মেয়েটার চোখ ছলছল করছে।
"মনে হচ্ছে আমার চাইতে তোমার দুঃখ আজ বেশি"
"দুঃখ তো সবারই থাকে ম্যাম, কারো দুঃখ হচ্ছে বেদনা, আর কারও দুঃখ বিলাসিতা"
"কার দুঃখ বেদনা আর কার দুঃখ বিলাসিতা?"
"আমারটা বিলাসিতা, আপনারটা বেদনা"
"সবার দুঃখই দুঃখ, কারও দুঃখ বিলাসিতা না"
"আমারটা বিলাসিতা। আমার তো দুঃখ করার সময় নেই, জীবন যুদ্ধে এখনো লড়েই যাচ্ছি, সুখ পাখির খোঁজ আর পেলাম না"
"তবুও তো দিন শেষে ঘুম হয়, মাঝরাতে আতঙ্কে ঘুম ভেঙে যায় না, নিজের ঘরে নিজেকে অনিরাপদ লাগে না!"
"টাকা না থাকলে কি কেউ নিরাপদ?"
"কখনো কখনো টাকাই যে আমাদের অনিরাপদ করে দেয়!"
"আচ্ছা, জীবন এমন কেন?"
"আমি ভাবি। জীবন এমন কেন?"

আমরা দুজন হাঁটছি সোডিয়াম আলোয় আধো আলো আধো অন্ধকার মাখা রাস্তায়। বৃষ্টি না হলেও বাতাসে গাছে জমে থাকা বৃষ্টির ফোঁটা আমাদের উপর ঝিরঝির করে পড়ছে। আমি পকেটে হাত ঢুকিয়ে সামনের দিকে ফিরে হাঁটছি। মেয়েটা আবার বলতে শুরু করল,
"আজ কেন এমন করলাম, জানতে চাইবে না?"
আমি চুপ করে থাকলাম। দুই তিন মাস ধরেই উনি আমার কফিশপে আসেন। প্রথমবার দেখায় ভেতরে অনেক কিছু উলট পালট হয়ে গিয়েছিল। গালের সাথে লেপ্টে থাকা চুল আর ভেজা শরীর দেখে তাকে পানিপরী মনে হয়েছিল। এরপর থেকে মাঝে মাঝে সে অদ্ভুত সব কাজ করত, আমার সাথে আগেও দিনের শেষ পর্যন্ত থেকে বাসায় গিয়েছে। তবে আজকের কাজ দেখার পর আমি অনেক কিছুই বুঝেছি, তবুও মন বলছে, এত কিছু বুঝতে নেই। আমাকে চুপ থাকতে দেখে সে বলল,
"আমায় বিয়ে করবে?"

আমি থমকে দাঁড়ালাম। এমন একটা কথা বলবে ভাবিনি। এ যে অসম্ভব!  আমি আবারও হাঁটতে থাকলাম, এবার আগের চেয়ে দ্রুত পা চালাচ্ছি। সে দৌড়ে আমার পথ রোধ করল।
"জবাব দিলে না যে? বিয়ে করবে?"
"দেখুন, আপনাদের বড় লোকদের কাছে আমরা খেয়াল খুশির পাত্র হলেও হতে পারি, কিন্তু জীবনটা আমাদের কাছে খেয়াল খুশির অংশ নয়। আমাদের কাছে দুঃখটাও অনেক বড় বিলাসিতা, সেখানে আপনি কি করে এমন অবিবেচিত প্রস্তাব করলেন?"
"বিশ্বাস কর, এতে তোমার আমার দুজনেরই মঙ্গল! হিসেব করে দেখো, রাজকন্যা, রাজ্য দুটোই পাবে, সাথে নিজের একটা মানুষও হবে!"
"আমার নিজের একটা মানুষ চাই, রাজ্য চাই না, না রাজকন্যা"
"আচ্ছা, ঠিক আছে, সব সম্পদ বাবা আর ভাইকে দিয়ে আসব। শুধু আমি তোমার হব। চলবে?"
"এরপর উনারা যদি আসেন আমাদের পেছনে? এটা বাংলা সিনেমা নয় সেনোরিটা, এটা বাস্তব জীবন!"
"চলো না জীবনটা সাজিয়ে নেই! কিচ্ছু হবে না, বিশ্বাস করো"

আমি মাথা নাড়লাম।
"যেদিন পৃথিবীতে উচ্চবিত্ত আর মধ্যবিত্তের মাঝের দেয়া গুড়িয়ে পড়বে, সেদিন আপনাকে আমি আমার করে নিব। বিশ্বাস করুন, সেদিন আপনাকে অনেক বেশি ভালোবাসব! ততদিন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন"
"আমি অপেক্ষা করব!"

আমি সেখান থেকে চলে আসলাম। আমি জানি সে অপেক্ষা করবে,আর সেও জানে আমি আসব না। কারণ পৃথিবীতে এ বৈষম্যের দেয়াল মানুষের জীবন আর রক্তে গড়ে উঠেছে, সে দেয়াল ভাঙার সামর্থ্য না ওর আছে, না আছে আমার। আমি জানি, আমাদের দুই পৃথিবী কখনো এক হবার নয়!

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen2U.Pro