#৫

Màu nền
Font chữ
Font size
Chiều cao dòng

#প্রাপ্তি

#৫

রশ্নী দ্রুত হাতে কিছু কাপড় গায়ে চাপিয়ে বের হয়,ডাইনিং এ নওশাবার সাথে দেখা হয়।
-এত সকালে কোথায় যাচ্ছিস?অফিসে?
-না!হাসপাতালে হামলা হয়েছে!বাচ্চাটার উপর!
-ও মাই গড!কখন!
-হুমায়রা কল দিল,আমি ওখানেই যাচ্ছি।তুমি কি আসবে?
-আমার একটু কাজ আছে।তুই যা,আমি পরে আসছি।

রশ্নী একদৌড়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে।১৫মিনিটের মাঝে হাসপাতালে পৌঁছে যায়।সেভেন্থ ফ্লোরে পৌঁছে দেখে সেখানে হাসপাতালের বেশ কিছু ডাক্তার, নার্স আর পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে জটলা করে।রশ্নী কাঁপা কাঁপা পায়ে সেখানে গিয়ে দেখে হুমায়রা ডান হাত দিয়ে বাঁ হাতের কনুই ধরে রেখেছে,সেখানে ব্যান্ডেজ বাঁধা,উপরে ছোপ ছোপ রক্তও আছে।রশ্নী প্রশ্নবিদ্ধ চোখে হুমায়রার দিকে তাকায়।
-ম্যাম!আমি চেষ্টা করেছি ওকে রক্ষা করার।কিন্তু সেটা করতে গিয়ে...
-তোমার বড় কিছু হয়নি তো?হাতের কি অবস্থা?
-আমি ঠিক আছি ম্যাম,আর বেবীটাও ঠিক আছে।

রশ্নী স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। হুমায়রাকে রেখে ওয়ার্ডের ভেতরে যায়,বাচ্চাটা চোখ খুলে ড্যাবড্যাব করে চারপাশটা দেখছে তার নিষ্পাপ চোখের দৃষ্টিতে। ওর এই নিষ্পাপ দৃষ্টি জানে না কতটা কঠিন এই বাতাসে নিঃশ্বাস নেয়া ওর জন্য।ও এখনও জানে না যে,ওর এই নিঃশ্বাসটুকুই বন্ধ করতে কয়েকদিন বয়সেই সে শত্রু জুটিয়ে ফেলেছে।হয়ত সে জন্ম সূত্রেই শত্রু নিয়ে জন্মেছে,কে জানে! রশ্নী বাচ্চাটাকে বুকে চেপে ধরে দ্রুত পায়ে হুমায়রার কাছে গিয়ে ওকে আলাদা ঘরে বসে।
-কি হয়েছে শুরু থেকে বলো।
-ম্যাম,আমি সকালের দিকে বাচ্চাদের ওয়ার্ডে আসি।তখন ওকে খাওয়াই তেছিলাম।খাওয়ানো শেষ হইতেই দেখি এক লোক দরজা খুলে এখানে ঢুকতেছে।আমি জিজ্ঞেস করলাম,কে আপনি? সে কোন উত্তর দিল না।ওকে খাটে দেইখা দ্রুত আইসা নেওয়ার চেষ্টা করে,তখন আমি ধাক্কা দেই।ধাক্কা খাইয়া সইরা যায়,কিন্তু আবার উঠে আমাকে এক ধাক্কায় ফেলে দেয়!বাচ্চাকে ধরতে গেলে আমি চেয়ার ছুইড়া মারলাম।সে তখন আমার হাতে টেবিল থেইকা কাঁচের বোতল নিয়া মারে।আমি তো অনেক জোরে চিৎকার দেই!তাও লোকটাকে পেছন দিয়া কাটা হাত নিয়াই জাপটায় ধরছি।এর মধ্যেই আফজাল ভাই চইলা আসছে,তখন সে আমারে ফালায় দিয়া পালাইছে,বাচ্চারে নিতে পারে নাই!

হুমায়রা চোখ বড় বড় করে কথাগুলো বলে জোরে জোরে নিঃশ্বাস নেয়।রশ্নী অবাক হয়ে ভাবে,হচ্ছে কি!
-তুমি কি লোকটাকে দেখলে চিনতে পারবা?
-অবশ্যই!
রশ্নী বাইরে সবার স্টেটমেন্ট নেয়া অফিসারের কাছে যায়।
-স্যার,আমাকে তো চিনেছেন?
পুলিশ কিছুক্ষণ তার দিকে তাকিয়ে স্মৃতি মনে করার চেষ্টা করার ভাব করছে,
-হুম,আপনি রশ্নী আবরার,ক্রাইম রিপোর্ট করেন।তা এখানেও চলে আসছেন?
-আপনি বোধহয় জানেন না যে বাচ্চাটাকে আমিই পেয়েছি!
-ও আচ্ছা! জানতাম না।
-দেখুন,এখানে বাচ্চাটা রেখেছি গতকাল,আর আজই হামলা হল।এর পেছনের গল্পটা ভয়ানক কিছু,আপনাদের সাহায্য ছাড়া...
-দেখা যাচ্ছে তো সবই... তবে আমরা আমাদের কাজ করব।
-ঠিক আছে,কিন্তু আমি বলতে চাচ্ছি...
-আমিন! চা নিয়া আসো তো!ঘুম পাইতেছে!
হাই  তুলতে তুলতে জসীম নামের অফিসার তার সহকারীকে বলে।সে যে একেবারে দায়ে পড়ে এখানে এসেছে আর এসব নিয়ে খুব একটা আগ্রহও নেই,তা রশ্নীর কাছে স্পষ্ট। অনেক ক্রাইম সিনে সে রিপোর্টের জন্য উপস্থিত হয়েছে,উত্তেজনায় কাঁপছিল।অথচ সেখানকার দায়িত্বপ্রাপ্ত ইন্সপেক্টর এর চেহারায় কোন ছাপ  নেই,তারা খুব স্বাভাবিকভাবে ব্যাপারটা সামলাচ্ছে।এটা কি নানারকম অপরাধ দেখতে  দেখতে তাদের কাছে সবটা গা সওয়া হয়ে গেছে কিনা তা জানে না।রশ্নী তারপরও আরেকবার চেষ্টা করে তাকে বোঝানোর।

-দেখুন,আপনি হাল্কাভাবে ব্যাপারটা দেখছেন।ওর পুরো ঘটনা যদি শুনেন,তাহলে বুঝতে পারবেন,পুরো ঘটনাটা কিন্তু আমাদের দেশের উপর অনেক খারাপ প্রভাব ফেলবে।
ইন্সপেক্টর জসীম বিরক্তিতে মুখ কুঁচকে বলেন,
-ধুর,ঘ্যানঘ্যানানি বন্ধ করেন তো।আমাদেরটা আমরা বুঝব,আপনার বুঝানো লাগবে না।কোন জিনিসে গুরুত্ব দেয়া লাগবে আর কোনটাকে দেয়া লাগবে না,আমরা জানি।নিজের চরকায় নিজে তেল দেন!

বিড়বিড় করে সে বোধহয় রশ্নীকে গালি দিয়ে সরে যায়।জেদ চাপে রশ্নীর।বাচ্চাটা ওর দায়িত্বে আছে,ওর কিছু
হলে নিজেকে মাফ করতে পারবে না।তাছাড়া এসব কেইসে পুলিশও অনেক সময় মদদ দেয়।তাই এখানে যে ও কোনোপ্রকার সহায়তা পাওয়া যাবে না,এ ব্যাপারে রশ্নী নিশ্চিত।ও চুপচাপ সেখান থেকে সরে আসে।কেবিনে ঢুকে বাচ্চাটাকে টাওয়েলে পেঁচিয়ে বুকের সাথে চেপে ধরে। ওর যা যা আছে সব একটা ব্যাগে ভরে কাঁধে নেয়,এসময় হুমায়রা এসে রশ্নীকে দেখে ফেলে।
-আমি ওকে নিয়ে যাচ্ছি।এখানে থাকলে ও বাঁচবে না,আমি জানি।কাউকে কিছু বলো না,আমি ওকে নিয়ে নিরাপদ কোথাও রাখব।

রশ্নী গাড়ি ড্রাইভ করে নওশাবার বাসায় চলে আসে।দরজা খুলে নওশাবা ওকে দেখে খুশি হয়।
-ওকে নিয়ে এসছিস?কোন সমস্যা হয়নি তো?
-নাহ,সমস্যা হয়নি,আল্লাহর রহমত।তবে ওখানে থাকলে হয়ে যেত।এজন্যই আনলাম।
-ভালো করেছিস।ভেতরে আয়।
-আপু,কিছুদিন ওকে রাখলে অসুবিধা হবে না তো?
এইসময় নওশাবার দুই ছেলে ভেতর থেকে দৌড়ে আসে,তারা বাচ্চাটাকে নিয়ে খুবই উত্তেজিত আর খুশি।ওদের দিকে ইশারা করে হেসে বলে,
-তোর চিন্তার কোন কারণ নেই।

রশ্নী ওকে রেখে উঠে দাঁড়ায়,অফিসে যেতে হবে ওকে।আজ দুদিন ঠিকভাবে অফিস করতেই পারছে না।নওশাবার বাসায় দুজন কাজের মানুষ আছে,তাছাড়া এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট ভাল,রশ্নীর চিন্তার কোন কারণ নেই। রশ্নী তারপরও হাল্কা দুশ্চিন্তা নিয়ে অফিসের দিকে চলে যায়।

অফিসে ঢুকতেই সবাই ওকে এদিক ওদিক থেকে বাচ্চাটার খবর জানতে চায়।ছোটবড় সবাইই আজকের সকালের খবরটা ইতিমধ্যে পেয়ে গেছে।সবার শেষে তুহিন হাতে করে কতগুলো কাগজ নিয়ে ওর কাছে আসে।
-স্যার বলেছে এই রিপোর্টটা দেখে দিতে।অনেক নাকি ভুল আছে,সামনেই এগুলো ব্রোডকাস্টে চলে যাবে।
-একবারও কি জিজ্ঞেস করবে না আমি কেমন আছি?

তুহিনের চোখে তখন গোপন অভিমান,তবে মুখ ভাবলেশহীন,আর কন্ঠে কাঠিন্য। রশ্নীর দিকে তাকিয়ে বলল,
-কাজগুলো দ্রুত করে দিতে হবে।
তুহিন ঘুরে চলে যেতে চাইলে রশ্নী ওর হাত চেপে ধরে।
-অভিমান?নাকি রাগ?
-আমার আবার অনুভূতি!
-উহু,সত্যি করে বলো না?
-রশ্নী...আ...কিছু না।
-খুব ব্যস্ত ছিলাম দুদিন,রাগ করো না প্লিজ?তুমি তো জানো তোমার উপর ভরসা করেই আমি আছি।তুমি না থাকলে আমার যে কি হত!

রশ্নীর নরম কন্ঠে তুহিনের মন কিছুটা বিগলিত হয়।সে কপট রাগে চোখ নাড়িয়ে বলে,
-দিলে তো আমাকে কনভিন্স করে!তোমার সাথে আমি একটু অভিমানও করতে পারি না!
রশ্নী মিষ্টি করে হাসে,ওর হাসির দিকে তুহিন এক মুগ্ধতার দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।হাসলে রশ্নীর বাঁ পাশের গেজ দাঁত দেখা যায়,তখন ওকে অন্য রকম সুন্দর লাগে,একেবারে প্রেমে পড়ে যাবার মত।অবশ্য তুহিন যে কতবার এই মেয়ের হাসির প্রেমে পড়েছে তা নিজের কাছেই অজানা।আর রশ্নী?র‍শ্নী এসবের খবর রাখে না।ওদের মাঝে সম্পর্কটা কলিগ থেকে কিছু বেশি হয়ে বন্ধুত্বের দিকে এগিয়েছে।তবে এর বাইরে যাওয়ার সাহস হয়নি।একবার তুহিন রশ্নীকে নিয়ে ঘুরতে গিয়েছিল।আজকাল ঘুরতে যাওয়া মানেই তো ঢাকার আশেপাশে কোন গ্রামাঞ্চল যেখানে সবুজ গাছ,নির্মল অক্সিজেন আর ছোট কোন নদীর দেখা মিলবে।ওরাও এরকম এক যায়গায় গিয়েছিল।তবে সেখানে নদীটা কোন ছোট নদী ছিল না,বেশ বড় ছিল এর পাড়ে দাঁড়িয়ে রশ্নীর কাঁধ পর্যন্ত ঝুলতে থাকা চুল গুলো বাতাসে উড়ে উড়ে ওর ফর্সা ঘাড় উন্মুক্ত করে দিচ্ছিল।তুহিনের ভীষণ ইচ্ছে হচ্ছিল ওর উজ্জ্বল ঘাড়ে একটু ছুঁয়ে দিতে,এই নারীর দেহের প্রতিটি অঙ্গ,বিশেষত বুকের বাঁ পাশে থাকা অঙ্গটি দখলে নেয়ার।সেদিন রশ্নী পড়েছিল পিচ রঙের লং গাউন আর হাল্কা লেমন রঙের স্কার্ফ,চেহারায় হাল্কা মেকাপ,ঠোঁটে গোলাপী লিপস্টিক।তুহিনের ওকে মনে হচ্ছিল সদ্য ফোটা ফুল।মেয়েটা সাধারণত জিন্স,টপ্স পড়েই এদিক ওদিক দৌড়ে চলে,কিন্তু এভাবে সহজে ওদের দেখা হয় না,রশ্নী সাজেই না,হাল্কা ভাবেও না।তবে সেদিন ওকে দেখে স্নিগ্ধ বৃষ্টিতে ভেজা ফুল বলে তুহিনের বারবার ভুল হচ্ছিল।ও ভেবেছিল সেদিন প্রপোজ করবে।কথায় বলেছিল,
-তোমার কোন সিক্রেট এডমাইরার নেই?
-কি জানি,থাকতেও পারে!কেন?
-যদি কোন ভাল,মানে তোমার জন্য যোগ্য এমন কেউ তোমার কাছে আসে,তোমার প্রতি তার অনুভূতি প্রকাশ করে, তুমি কি ফিরিয়ে দিবে?
রশ্নী কালবিলম্ব না করেই বলেছিল,
-অবশ্যই!
-কেন!
-আমি জীবনে একবার বিয়ের স্বাদ পেয়েছি,আর পাওয়ার রুচি নেই।আমি জানি বিয়ের পর সব আবেগ পালিয়ে যায়,থেকে যায় নির্মম বাস্তবতা। আমি একাই ভাল আছি,আমার ভাল মন্দ কাউকে প্রয়োজন নেই!

রশ্নীর উত্তর তুহিনের ওর দিকে বাড়ানো হাত থামিয়ে দিয়েছিল।তুহিন গুটিয়ে নিয়েছিল নিজের অনুভূতির পাহাড়।কিন্তু যেখানে দুজন সবসময় একে অপরের চোখের সামনে থাকে,বন্ধুর মত পিঠে পিঠে ঠেকিয়ে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে,সেখানে অনুভূতি বেশিদিন লুকানো থাকার নয়।তাই তুহিনের এই দুর্বলতা রশ্নী টের পেয়ে ব্ল্যাকমেইল করে। তুহিনকে দুষ্টুমি করে ও জিজ্ঞাসা করেছিল ওর প্রতি অনুভূতির কথা।লাজুক ছেলেটা সাথে সাথে অস্বীকার করেছিল।তুহিনের মাঝে মাঝে মনে হয়,রশ্নী সব বুঝেও ইচ্ছে করে না বোঝার ভাণ করে। কারণ মেয়েরা তো না দেখেই বলতে পারে কোন ছেলে ওকে দেখছে,কিভাবে দেখছে,তাই না??

তবুও রশ্নী ওর মতই থাকে।ওদের সম্পর্কটা রশ্নীর জীবনের মত এক যায়গাতেই আটকে আছে।

আর এই মুহূর্তে তুহিনের দৃষ্টি আটকে আছে কাঁচের দেয়ালের ওপাশে দাঁড়িয়ে কাজ করা রশ্নীর উপর।মেয়েটা টেবিলে জমে থাকা কাগজপত্র একের পর এক হাতে নিয়ে দুশ্চিন্তা নিয়ে দেখছে।তুহিন ঠোঁটের উপর হাত রেখে একমনে ওকে দেখছে।যদিও দেখতে আধুনিক স্বাধীনচেতা নারীবাদী মনে হয়,তবুও তুহিনের ধারণা,মেয়েটা ভেতর একটা ভয়ংকর আকর্ষণীয় বাঙালী নারী লুকিয়ে আছে যে কিনা শাড়ি কোমরে পেঁচিয়ে ঘামতে ঘামতে ভালোবাসা নিয়ে রান্না করে,পতী সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করে,রাতের আধো আলোয় গ্রীক প্রেমের দেবী ন্যায় হাজির হয়,যে নারীর চোখের ভালোবাসায় একজন পুরুষ প্রতি মুহূর্তে তাল হারায়,তার হাতের মুঠোয় হাত রেখে জীবনটা পার করতে পারে।তুহিনের শক্ত ধারণা,রশ্নী এরকম এক নারীকে নিজের নারীবাদী রূপের আড়ালে লুকিয়ে রেখেছে।পৃথিবীকে ও জানাতে চায় না কতটা সৌন্দর্য, স্নিগ্ধতা আর মায়া নিজের মাঝে ধারণ করে আছে।তুহিনের বুকের ভেতর মাঝে মাঝে তীব্র দামামা বেজে ওঠে,নিজের মন,হৃদয় তার বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে বসে যেন রশ্নীকে টেনে হিঁচড়ে নিজের করে নেয়।দুদিন ধরে তুহিনের এমনটাই হচ্ছিল।রশ্নীকে এক পলক দেখার জন্য,ওর ও গেজ দাঁতের হাসি,ঘাড় সমান চুল আর কুয়োর মত গভীর টলটলে দুচোখের চাহনীতে চাহনী মেলাতে তুহিন তৃষ্ণায় এক প্রকার মারাই যাচ্ছিল।তাই আজ দেখেই অভিমানে ওর মনটা খারাপ হয়েছিল।এখন ভালো লাগছে।সামনের ঘরে পছন্দের মানুষ ঘুরছে,এই তো অনেক পাওয়া!

চলবে...

লেখনীতে,  #Abiar_Maria

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen2U.Pro