২২

Màu nền
Font chữ
Font size
Chiều cao dòng

আমি আবার, আর একটা বার
লেখা #AbiarMaria

২২

পরদিন সকালে আবার সব স্বাভাবিক। তরীর মা জিসানকে জামাই আদর করছে, তরী আর খেয়া মাকে সাহায্য করছে। দুপুরের খাবার বাইরে খাবে, সেটা আগেই বলা ছিল, তাই তৈরি হয়ে ওরা চারজন বেরিয়ে আসলো। জিসান ওদের নিয়ে একটা বিশাল রেস্টুরেন্টে আসলো। এর বাইরে চেয়ার টেবিল দেয়া আছে, ছোট পানির ফোয়ারা আছে। চাইলে ভেতরেও বসা যায়, সেখানে এসি আছে। জিসান ওদের নিয়ের ভেতরে গিয়ে বসলো। কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর ফতুয়া জিন্স পরা একটা মেয়ে ওদের দিকে এগিয়ে আসে। জিসান তাকে দেখে খুশিতে দাঁড়িয়ে যায়, ওরা হাত মেলায়। আনন্দ প্রকাশ শেষে  জিসান তরীর দিকে ফিরল।

"তরী, এ হচ্ছে আমার ছোট থেকে বড় বেলার বান্ধবী, স্কুল প্লাস ভার্সিটির ফ্রেন্ড রোদেলা। দেশের বাহিরে গিয়েছিল একেবারে । আর রোদেলা, আমার ওয়াইফ তরী"

রোদেলা এগিয়ে এসে তরীকে এমন ভাবে জড়িয়ে ধরল যেন ওকে অনেক আগে থেকে চেনে। তারপর আনন্দে উদ্বেলিত হয়ে বলল,
"শি ইজ সো প্রিটি দ্যান পিকচার! কি কিউট বউ তোর মাশাল্লাহ! তোমার কথা অন্নেক শুনেছি জি
সানের কাছে, একেবারে পুরো বর্ণনা! ও ছবি দিতে চায়নি, জোর করে তোমার ছবি নিয়েছি। তুমি ছবির চেয়েও অনেক বেশি প্রিটি!"

তারপর ইশতি আর তন্দ্রার দিকে হাত বাড়িয়ে বলল,
"আল্লাহ! বেবীগুলাও তো কি কিউট! একদম রসগোল্লা দুজন! কাম হেয়ার!"
ইশতি তরীর পেছনে লুকালো, কিন্তু তন্দ্রা সহজেই রোদেলার কোলে চলে গেল। ওরা সবাই এক সাথে বসে লাঞ্চের অর্ডার দিয়ে আড্ডা দিতে থাকলো। বেশিরভাগ কথাই দুই বন্ধু বলছে। এদিকে ইশতি বায়না ধরছে কেবল বের হওয়ার জন্য। কখনো সে সিটের উপর দাঁড়িয়ে যাচ্ছে, কখনো পিছলে টেবিলের নিচে ঢুকে যাচ্ছে। তরী অস্থিরতার সাথে জিসানকে বলল,
"আমি বাচ্চাদের নিয়ে একটু বাইরে ঘুরে আসি? খুব জ্বালাচ্ছে ওরা"
"হ্যাঁ যাও, খেয়াল রেখো। আবার খাবার কিন্তু ঠান্ডা হয়ে যাবে"
"সমস্যা নেই। আমি একটু ঘুরে আসি"

তরী বাচ্চাদের নিয়ে বাহিরে হাঁটছে। রেস্টুরেন্টের খোলা যায়গাটায় দুপুরের রোদ ভালোভাবেই পড়ছে। তন্দ্রা মায়ের হাত ধরে হাঁটছে আর ইশতি এদিক ওদিক ছোটাছুটি করছে। তরী মাঝে মাঝে ওকে এদিক ওদিক যেতে নিষেধ করছে। এমন সময় দুম করে একজনের পায়ে লেগে ইশতি উল্টে পড়ে গেল। তরী দৌড়ে এসে ছেলেকে তুলে সরি বলতে গিয়ে সামনের মানুষটাকে দেখে থেমে গেল। ছেলেকে উঠিয়ে দাঁড় করিয়ে দিতেই সামনের দাঁড়ানো লোকটা বলল,
"কি খবর? কেমন আছিস?"
"তুই এখানে?"
"হ্যাঁ, আসতে পারি না। তুই এখানে কার সাথে এসছিস?"

তরী জবাব দিল না।
"এখনো রেগে আছিস নাকি আমার উপর?"
তরী তাচ্ছিল্য করল,
"তুই কে যে তোর উপর আমার রাগ করতে হবে?"
"বাহ, ভালোই তো! তা, বরকে নিয়ে এসছিস নাকি? কোথায় সেই ভাগ্যবান ব্যক্তি? আশেপাশে দেখছি না যে?"
"উনাকে দেখে তুই কি করবি? আমার ব্যক্তিগত ব্যাপারে আগেও নাক গলাতে নিষেধ করেছিলাম না তোকে?"
"আহ, নাক গলাবো কেন! তোর প্রাণপ্রিয় বন্ধুদের কাছ থেকেই তো ছবি পেলাম! দেখবি? এই দেখ"

সে পকেট থেকে ফোন বের করে তরীর বিয়ের ছবি দেখাতে উদ্যত হয়। তরী হাত তুলে থামায়।
"দেখ আতিক, আমার বিয়ের ছবি তোর কাছ থেকে দেখার কিছু নেই। আমাকে দেখলেই কি তোর সব উল্টাপাল্টা আচরণ করতে ইচ্ছা করে? দয়া করে আবার আগের মত ঢং শুরু করিস না!"
তরী উলটো ঘুরে চলে যেতে চাইলে আতিক বলল,
"ঢং তো তুই করিস! আমরা ছেলেরা কি ঢং করতে পারি নাকি? খুব তো বলছিলি জীবনেও বিয়ে করবি না। দুইবার তোকে বিয়ের প্রস্তাব দিছি, দুইবারই ফিরায় দিছিস৷ জামাইয়ের প্রতি নাকি খুব দরদ তোর? এখন বিয়ে করলি কেন? দরদ, প্রেম সব চলে গেছে?"

তরীর মেজাজ সপ্তমে চড়ে গেছে। নিচু গলায় চিবিয়ে চিবিয়ে বলল,
"আতিক, মুখ সামলা! এইখানে যদি আজেবাজে কথা বলিস, খুব খারাপ হবে!"
"তাই? কি খারাপ হবে শুনি? ওয়েইট, তার আগে বল কি এমন আছে তার মাঝে যেটা আমার কাছে নাই? টাকা পয়সা আমার চেয়ে বেশি? নাকি বিছানায় এক্সট্রা সার্ভিস দেয়? অবশ্য বিছানায় যাওয়ার একটু সুযোগ পেলে আমিও দেখাতে পারতাম আমার পারফরম্যান্স!"

তরী আতিকের কলার চেপে ধরে বলল,
"ওর আর তোর মধ্যে পার্থক্য শুনবি? তুই একটা শুয়রের বাচ্চা! আর ও মানুষের বাচ্চা! মানুষ কখনো কোনো শুয়রের বাচ্চার সাথে থাকে না!"

কথা শেষ করে কলার ধরে ধাক্কা দিল। তারপর আঙুল তুলে বলল,
"আরেকবার যদি আমাকে এগুলা বলতে আসিস, তোর জিহবা টেনে আমি ছিড়ে ফেলব দেখিস!"
আতিকের খুব একটা গায়ে লাগেনি সেটা। ব্যাঙ্গাত্মক হাসি দিয়ে বলল,
"বাহ, গায়ে খুব জোর হয়েছে দেখছি! তা তোর জামাইকে গিয়ে বলব নাকি যে তুই টাকা পয়সার জন্য বিয়ে করেছিস তাকে? এইটাই একমাত্র কারণ মনে হয়!"
"তোকে কিন্তু আমি ওয়ার্নিং দিচ্ছি আতিকের বাচ্চা!"
"উ উ উ উ! খুব ভয় পাইছি!"

ভয় পাওয়ার ভাণ করে চোখ বড় বড় করে তারপর অট্টহাসিতে ফেটে পড়ল। তারপর বলল,
"তুই যে টাকা জন্য আমাকে বিয়ে করিস নাই, ওই টাকার কুমিরকে বিয়ে করছিস, খুব ভাল করে জানি! আমি একা না, তোর বান্ধবীরাও এরকমই ভাবে। তুই একটা লোভী, তোর মত সুন্দরীরা লোভীই হয়! আমি না বললেও তোর বেকুব দ্বিতীয় জামাই ঠিকই একদিন বুঝবে! ভালোই তো, এক বাড়ির দুই ছেলেকে পাইছিস!"

তরী তেড়ে এসে ওর বুকে দুই হাতে সজোরে আঘাত করে দূরে সরায়। ঠিক তখন ওর খেয়াল হয়, রেস্টুরেন্টের লোকজন কানাকানি করছে, বিশেষ করে স্টাফরা। তরী এক হাতে তন্দ্রাকে কোলে নিয়ে ইশতির হাত আরেক হাত দিয়ে ধরে দ্রুত ভেতরে ঢুকে গেল। জিসান এখনও রোদেলার সাথে গল্প করছে। তরী ওদের পাশে দাঁড়ানোর পর জিসান মুখ তুলে তাকায়।
"তোমার খাবার তো ঠান্ডা হয়ে গেছে। ওদেরকে আমার কাছে দিয়ে খেয়ে নাও?"
"আমি বাসায় যাবো, জরুরী কাজ পড়ে গেছে"
"বাসা থেকে ফোন আসছিল নাকি?"
"হ্যাঁ, আম্মুর শরীর খারাপ লাগছে"
"সে কি! আসার আগেও তো ভালো ছিল!"
"এখন খারাপ লাগছে। বাসায় যাওয়া দরকার"
"ঠিক আছে, ঠিক আছে!"

রোদেলার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে ওরা রেস্টুরেন্ট থেকে বেরিয়ে আসে। তরী বারবার ঘাড় ঘুরিয়ে দেখতে থাকে আতিক আছে কিনা আশেপাশে। সৌভাগ্যক্রমে কোথাও দেখতে পেলো না। জিসান একটা টেক্সিতে উঠে পড়ল ওদের নিয়ে। তরী গাড়িতে উঠেই খেয়াকে মেসেজ দিয়ে জানায় যেন ওর আম্মু অসুস্থ, সেটা বলে। তরীর অস্থিরতা জিসানের চোখ এড়ালো না।
"কোনো সমস্যা তরী? মায়ের শরীর কি বেশি খারাপ?"
"নাহ, আসলে আমারই খারাপ লাগছে"
"মা কি তাহলে ঠিক আছে?"
"আছে মোটামুটি"
"তোমার খারাপ লাগছে কেন?"
"এমনিই। মাথা ঘোরাচ্ছে। ঘুম হচ্ছে না ভালোভাবে, এজন্য হয়ত। রাতে বারবার ঘুম ভাঙে। ঠিক হয়ে যাবে"

জিসান আর কথা বাড়ালো না। তরী জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে সেদিকে মনোযোগ দেয়ার বৃথা চেষ্টা চালালো কিছুক্ষণ। তন্দ্রাকে বুকে জড়িয়ে আবার ফোন হাতে নিয়ে ফেসবুকে লগইন করল। অনেক দিন হয়েছে ফেসবুকে উঁকি দেয়া হয় না। তরী ফেসবুকে দেখল ষাটের উপরে নোটিফিকেশন আর অনেক গুলো মেসেজ। নোটিফিকেশন এর দিকে গিয়ে দেখল, খেয়া ওকে ট্যাগ করে বিয়ের ছবি ফেসবুকে দিয়েছে। কেবল খেয়া না, নেহাও দিয়েছে।  অথচ তরী কোনোভাবেই চায়নি ওর বিয়ের ছবি ওর বন্ধুরা কেউ দেখুক। এজন্য ওর কোনো বন্ধু, বান্ধবীকে বিয়েতে দাওয়াতও দেয়নি। অথচ এই কাজ ওর বোনেরা করে বসে আছে। বাহ!

তরী এবার ইনবক্সের দিকে মনোযোগ দিল। ওদের ভার্সিটি ফ্রেন্ডদের গ্রুপের অনেক অনেক টেক্সট। তরী উপরের দিকে স্ক্রল করতে করতে আতিকের কথার সত্যতা আবিষ্কার করল। কয়েকজন ওর দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে খুব রসিয়ে রসিয়ে দু একটা কথা বলেছে। আতিক তাতে ঘি ঢেলে দিয়েছে, আর তাতে আরও কয়েকজন তাল দিয়েছে। ওদের নিম্ন মানের মন্তব্যগুলো ও আর পড়তে পারছিল না। অন্যের ব্যক্তিগত ব্যাপারে মানুষ এভাবে মন্তব্য ছুড়তে পারে? তাও আবার এখানে তরী আছে জানার পরও?!

তরীর ইচ্ছা করছে ফোনটা জানালা দিয়ে ফেলে দিতে, এই স্টুপিডদের কাছ থেকে পালিয়ে চলে যেতে। ওর কয়েকজন আত্মীয়া খুব বাজেভাবে ওর পেছনে কিছু মন্তব্য করেছে যেগুলো কানে আসার পর ওর মানসিক শান্তি নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে আজকের এই ঘটনার রেশ কত দিন থাকে কে জানে! তরীর শরীরের রক্ত যেন টগবগ করে ফুটছে। কখন কি করে বসে, নিজেও বুঝতে পারছে না।

যখন বাসায় গাড়ি থামলো, পুরোপুরি থামার আগেই তরী দরজা খুলে মেয়েকে নিয়ে নেমে পড়ল। জিসান পেছন থেকে ভয় পেয়ে ডেকে উঠল। তরী সেদিকে না তাকিয়ে মেয়েকে নিয়ে বাসার ভেতর ঢুকে গেল। জিসান ভাড়া মিটিয়ে ইশতিকে নিয়ে বের হলো। এ সময় ইশতি জিসানের গলা জড়িয়ে ধরে বলল,
"আব্বু, আম্মু রাগ করে আছে"
"কেন? রাগ করেছে কেন?"
"একটা লোককে আম্মু মেরে এসেছে! এই যে, এভাবে"
ইশতি জিসানের কলার চেপে ধরল। জিসান অবাক। তরী কলার ধরে কাকে মারবে?! এজন্যই কি ওর খারাপ লাগছে? ওর শাশুড়ী কি আসলেই অসুস্থ? হয়েছেটা কি আসলে?

বাসার ভেতর ঢুকে দেখল ওর শাশুড়ী তার বোনের সাথে ডাইনিং এ বসে হেসে হেসে কথা বলছে। জিসান তাকে সালাম দিয়ে ঘরের ভেতর প্রবেশ করল। তরী সেখানে নেই, তন্দ্রাকে রেখে গেছে৷

ওদিকে তরী খেয়াকে টেনে নিয়ে খেয়ার ঘরে ঢুকে দরজা আটকে দিল। খেয়ার হাত ও এত জোরে ধরেছে যে খেয়া হাত ডলতে শুরু করেছে।
"কি হয়েছে তোমার?! বাসায় ঢুকেই আমাকে এভাবে টেনে ধরলা কেন?"
"আমার বিয়ের ছবি ফেসবুকে দিছিস কোন সাহসে?"
"কি আজব! তুমি তো আমাকে নিষেধ করো নাই!"
"আমার নিষেধ করা লাগবে কেন? তোর মাথায় ঘিলু নেই? আমার একটা ফ্রেন্ডকে পর্যন্ত বলিনি আমি, ওদিকে তোরা আমার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দিছিস! তুই কি জানিস আমার ফ্রেন্ডরা আমাকে নিয়ে কি কি আজেবাজে কথা বলতেছে? এক কাজ কর। একটা বিলবোর্ড লাগিয়ে সেটায় আমার ছবি টাঙিয়ে দে! পুরো দুনিয়াকে জানা যে আমার বোন দুই বাচ্চাসহ জামাই মারা যাওয়ার দেড় বছর পর বিয়ে করে ফেলছে!"

তরী খেয়ার ঘর থেকে বের হয়ে আসে। ওর খালা কি যেন একটা প্রশ্ন করল। তরী সেটার জবাব না দিয়ে সোজা নিজের ঘরে ঢুকে গেল। জিসান তন্দ্রাকে নিয়ে বিছানায় বসে ছিল, ইশতি অন্য ঘরে গেছে। জিসান ওকে শান্ত কন্ঠে প্রশ্ন করল,
"সত্যি করে বলো তো, কি হয়েছে? কোনো সমস্যা?"
"সিগারেট আছে আপনার কাছে?"
"কি আশ্চর্য! আমি বলি কি, আর আমার সারিন্দা বলে কি?"
"সিগারেট আছে কিনা, সেটা আগে বলেন"
"কেন? থাকলে কি হবে?"
"আমি জানি আছে। দিন আমাকে"

তরী হাত বাড়িয়েছে। জিসান একবার ওর হাতের দিকে, আরেকবার ওর মুখের দিকে চেয়ে বলল,
"তন্দ্রা আছে এখানে। তুমি কি এখানে স্মোক ক রতে চাও? তাছাড়া ওর ক্ষতি হবে। ওকে এখনো তুমি দুধ খাওয়াও"
"লেকচার শুনতে চাই নি। সিগারেট দিবেন কিনা?!"

তরীর যে অনেক রাগ উঠে আছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে। জিসান অনেক অবাক হয়েছে। তরী কি রাগ হয়ে স্মোক করতে চাচ্ছে, নাকি সত্যি সত্যি সে স্মোক করবে? এর একটাই জবাব, তরীকে সিগারেট দেয়া। জিসান পকেট থেকে সিগারেট আর লাইটার বের করে দিল৷ তরী দরজা লক করে বারান্দায় চলে গেল। তারপর সিগারেট জ্বালিয়ে টান দিল। জিসান তন্দ্রাকে বিছানায় বসিয়ে রেখে বারান্দায় গিয়ে দরজা টেনে দিল।

তরীকে দেখে মনে হচ্ছে ও এর আগেও সিগারেট খেয়েছে। ঠোঁটের এক পাশ দিয়ে সিগারেট ধরে যেভাবে টান দিচ্ছে, তাতে জিসান প্রচন্ড অবাক হয়েছে। ও পকেটে দুই হাত ঢুকিয়ে চুপচাপ ওকে দেখছে৷ তরী জিসানের দিকে চেয়ে ভ্রু নাচালো। জিসান বলল,
"তোমাকে দেখে মনে হচ্ছে আমি চিনতে পারছি না। একেবারে অন্য তরী! চুল খোলা রেখে সিগারেট টানছো, এই মেয়েকে কি আগে কখনো দেখেছি?"

তরী আরেকবার ধোঁয়া উড়িয়ে বলল,
"এখন তো দেখে ফেলেছেন। ফেলে দিবেন আমাকে?"
"নাহ। এই অপরাধ তো আমিও করি। তাই তোমাকে ফেলি কি করে?"

তরী জবাব না দিয়ে গ্রিলের মাঝ দিয়ে বাইরের বাড়িঘর দেখছে। জিসান মুচকি হেসে বলল,
"যাক, স্মোক করার একটা পার্টনার পাওয়া গেল"
"আমি কারো সাথে স্মোক করি না!"

বলে তরী সিগারেটে শেষ টান দিয়ে সেটা ভালভাবে নিভিয়ে বাইরে ফেলে দিল। তারপর দরজা খুলে টয়লেটের দিকে রওনা দিল। জিসান অবাক হয়ে তরীকে দেখছে। এটা কোন তরী যাকে সে মাত্র দেখল? তরী কি দ্বৈত সত্ত্বা নিয়ে থাকে? এই মাত্র যাকে দেখল, সে আসল? নাকি আগে যাকে দেখেছে?

চলবে...

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen2U.Pro