#২

Màu nền
Font chữ
Font size
Chiều cao dòng

#প্রাপ্তি

#২

ওপাশ থেকে নওশাবা হেসে উঠল,
-আরে ফেমিনিস্ট রশ্নী আবরার যে!হুট করে আমাকে মনে পড়ল কি ঝামেলাতে জড়ানোর পর?ঝামেলা বলা শুরু করলে তো আর থামবি না,তাই আগেই জিজ্ঞাসা করি,ভালো আছিস তুই?যেই ঝামেলায় জড়িয়েছিস,এটা ছাড়া আর কোন ঝামেলা নেই তো?
-আপু!আমি ভাল আছি।কিন্তু বুঝি না তুমি আমাকে এই টাইটেল দিলা কেন!
-কারণ তুই ফেমিনিজম মতবাদে চলিস!
-উফ,ছাড়ো তো।বলো,তুমি,ভাইয়া,তোমার দুইছেলে,সবাই ভালো আছে?
-তা আছে আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল।তারপর বল তোর ঝামেলার কথা।ঝামেলায় না পড়লে তো আপুর নাম্বার ডায়াল করিসই না!
-জানোই তো আপু সব।যাক,আসল কথায় আসি।ঝামেলা তোমার সাথে জড়িত।আজ সকাল সকালই অন্যরকম ঝামেলায় জড়িয়ে গেছি।আমি ভুল করলাম না ঠিক করলাম বুঝতে পারছি না।
-ঝেড়ে কাশো বাছা!
-আজ অফিসে যাওয়ার সময় বাসা থেকে বের হয়ে একটু দূরে যেতেই দেখি ময়লার মাঝে…

নওশাবাকে ওপাশ থেকে কেউ একজন ডাক দেয়।নওশাবা রাশ্নীকে লাইনে রেখে কথা বলে,তারপর তাড়াহুড়ো করে রশ্নীকে বলে,
-শোন, ভিভিআইপি এক রোগী এসছে, জানিসই তো ধ্নমন্ডির ল্যাবেইডে এখন বড় বড় সার্জারি গুলো করি,এক্ষুণি যেতে হবে।
-আপু,আমি অনেক বড় ঝামেলায় পড়েছি!তুমি আমার কথাটা...
-এক কাজ কর।তোর ঝামেলা নিয়ে আমার কাছে চলে আয়,আমি দেখছি ব্যাপারটা।বায়!

রশ্নী ফোনের দিকে তাকিয়ে আছে।নওশাবা আপু কল কেটে দৌড়ে এখন সার্জারীর জন্য ছুটে গেছে নিশ্চিত।এসব সার্জারী দু তিনঘন্টার মত লাগেই।রশ্নী এবার তুহিনকে কল দিচ্ছে,ওর কলিগ।
-তুহিন,আমি আসতে পারব না আজ।
-কেন?আজকে এডিটরদের সাথে মিটীং আছে,মনে নেই?তোমার লাস্ট রিপোর্টটা নিয়ে কথা বলার ছিল।ওটা এভাবে বলা যাবে না,উপর মহল থেকে চাপ আসতেছে।
-তুহিন প্লিজ,এখন না।আমি এসব নিয়ে পরে ভাবব।আপাতত বড় একটা কেসে আটকে গেছি।আমি এজন্য আসতে পারতেছি না।তুমি বসকে বলে দিও।
-রশ্নী,সবসময় তুমি আমাকে...
-আমি জানি তুহিন।আর তুমি তো জানোই আমাকে।একটু বসকে ম্যানেজ কর প্লিজ।
-ঝামেলা কি সেটা একটু বলো?

ছোট্ট বাচ্চাটা যেন টের পেয়েছে তাকে নিয়ে কথা হতে যাচ্ছে,তাই গা মুচড়ে কান্না শুরু করে দিল।বাচ্চার কান্না শুনে ওপাশ থেকে তুহিন বিস্ময় প্রকাশ করে,
-তোমার বাসায় বাচ্চার আওয়াজ?
-এটাই তো সেই ঝামেলা!
-বাচ্চা কোত্থেকে?
-আজ সকালে ময়লার ভাগারের মাঝে পেলাম
-সর্বনাশ,পুলিশ জানিয়েছ?
-নাহ,জানাব কিনা সিদ্ধান্ত নিতে পারছি না।আগে বাচ্চাটার একটা ব্যবস্থা করি,এরপর ভাবব পুলিশের কথা।বাচ্চাটার খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে।তুহিন,তোমার সাথে পরে কথা বলছি।

রশ্নী ফোন কেটে তৈরি হয়ে নেয়।ওর গাড়ি নিজেইএ ড্রাইভ করে সাধারণত,ড্রাইভিং সিটে অন্য কাউকে দেখতে ভালো লাগে না।তবুও ওর বস জোর করে ড্রাইভার দিয়ে দিয়েছে।এখন এই ড্রাইভারকে খুব প্রয়োজন।বাচ্চা নিয়ে ড্রাইভ করা সম্ভব না।

বাচ্চাটাকে শুধু টাওয়েলে জড়িয়েই রশ্নী বাসা থেকে বের হয়।খারাপ লাগছে ওকে কোন কাপড় পড়াতে পারেনি বলে।কিন্তু কিছু করার নেই।আধা ঘন্টার মাঝে রশ্নী গাড়ি নিয়ে নওশাবার হাসপাতালে চলে আসে।ওর চেম্বারের কাছাকাছি আসতেই ডাঃ রুবিনার,নওশাবার কলিগের সাথে দেখা হয়।
-রশ্নী!বাচ্চা কার?
-আমার আপু
-মানে!অনেক কথা,ওর জন্য কাপড় আর খাবারের ব্যবস্থা করবে?তার আগে একটু দেখ,আজ ময়লার মাঝে পেলাম
নওশাবার কলিগ বড় বড় চোখ করে বাচ্চাটাকে চেকাপ করে।
-তেমন কোন বড় সমস্যা নেই।অনেকক্ষণ কান্না করায় মনে হচ্ছে নিশ্বাসে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে,আর খাবার দরকার।শরীরে কোন ইঞ্জুরি নেই।তার মানে ছুড়ে ফেলেনি ওকে।
-আমিও তাই ভাবছি।কিন্তু এত মায়া থাকলে ফেলল কেন?!
-রশ্নী,মানুষ আজকাল কি করছে তা যদি জানত!

ডাঃ রুবিনা ওকে নিজের চেম্বারে নিয়ে যায় আর একজন পরিচিত নার্সকে ডাকে,নাম হুমায়রা।হুমায়রাকেও রশ্নী চেনে।মূলত নওশাবার সাথে পরিচয়ের কিছুদিন পর একটা চাঞ্চল্যকর রিপোর্ট করার দায়িত্ব পায় রশ্নী।কেসটা পুরো দেশে নাড়া দিয়ে ফেলেছিল।এক মহিলা তার সন্তানদের আর স্বামীকে কুপিয়ে মেরে প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যায়।ঘটনাটা এখানে শেষ হলেও পারত,হয়নি।তার নয় বছরের মেয়েকে গলায়,বুকে,হাতে পায়ে কোপালেও কোন মেজর রগ কাটা পড়ে নি।ফলে সারারাত ব্লিডিং হয়ে যেখানে মারা যাওয়ার কথা মেয়েটার,তার যায়গায় কোন একভাবে বেঁচে যায়।মেয়ের বাবার পরিবার বেশ নামকরা হওয়ায় কেসটা নিয়ে সর্ব মহলে আলোচনা হয়,প্রতিবাদ মিছিল বের হয়।

মজার কথা হল,এই নির্মম ঘটনাটিও রশ্নীর এলাকায় হয়।তাছাড়া বর্তমানে বড় বড় সব ক্রাইম রিপোর্টারদের মাঝে রশ্নীর নামও আছে।যেখানে অন্য রিপোর্টাররা মেয়েটার কাছে আসতে হিমশিম খাচ্ছিল,সেখানে রশ্নী সহজেই সেখানে চলে যায়।উদ্ধারের পর মেয়েটার সাথে রশ্নী নিজে কথা বলে,ওর জবানবন্দি রেকর্ড করে। রিপোর্ট করার সময় ওর হাত পা রাগে কাঁপছিল।আজকাল একজন মাও যেখানে মনুষত্ব্য হারিয়ে ফেলছে,সেখানে মানবতা বলে পৃথিবীতে কিছু কি আর আছে? ভয়াবহ সব শব্দ ব্যবহার করে রশ্নী রিপোর্ট তৈরী করে।যখন কনফারেন্স রুমে ও রিপোর্ট পেশ করে,সবাই একেবারে চুপ হয়ে যায়।সম্ভবত ওর উচ্চারিত প্রতিটি শব্দ,তার বাচনভঙ্গি আর কথার সুর সকলের বিবেককে টেনে হিঁচড়ে আঙুল দিয়ে সমাজের ভয়াবহ অসঙ্গতিগুলো দেখিয়ে দিয়েছিল।তবে সেকেন্ড পনের পর ইডিটর স্যার বলেন রশ্নীকে নিজের রিপোর্টের শব্দগুলোকে পরিবর্তন করে পজিটিভভাবে লিখতে।কারণ ওর এই রিপোর্ট টিলিকাস্ট হবে না।যদি হয়ও,তবে তার কারণে যে দাঙ্গা সৃষ্টি হবে দেশ জুড়ে,এর দায় এই প্রতিষ্ঠান নেবে না।রশ্নীর তীব্র প্রতিবাদের মুখেও তিনি তার সিদ্ধান্ত থেকে নড়েননি।ফলে রশ্নীর প্রতিবেদনটি মানুষের মাঝে যতটা আলোড়ন সৃষ্টির কথা ছিল,ততটা আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারেনি।

এই ঘটনার একমাত্র বেঁচে যাওয়া ভিক্টিম ডঃরুবিনার কাছে চিকিৎসাধীন ছিল।তখন থেকে এই হাসপাতালের অনেকের সাথেই ওর পরিচয়।হুমায়রা বাচ্চাটাকে কোলে নিয়ে বিস্মিত হয়,
-কি সুন্দর পরীর মত বাচ্চা!এই বাচ্চাকে ছুইড়া ফালাইল?এরা কেমন মানুষ আপা!
-মা যেখানে নিজের তিল তিল করে বড় করা বাচ্চা মেরে ফেলে,সেখানে এই বাচ্চা তো তেমন কিছুই না,একেবারে অল্প কিছু সময় মায়ের সাথে থেকেছে।যে সমাজে মায়া জন্মালেও সেই মায়া পায়ে পিষে ফেলতে পারে,সেই সমাজে এরকম ঘটনা কিছুই না।

হুমায়রা হাসিমুখে বাচ্চাটাকে নিয়ে যায় ওর কাপড় পড়িয়ে ওকে খাওয়ানোর জন্য।আপাতত রশ্নী নিশ্চিত হল।ওদের কাছে বাচ্চাটা নিরাপদ থাকবে,অন্তত বেঁচে থাকবে।কিন্তু নওশাবার সাথে কথা না বলে ওর পরবর্তী করণীয় ঠিক করতে পারছে না।

দুইঘন্টা পর নওশাবা ফ্রেশ হয়ে নিজের চেম্বারে ঢুকে।রশ্নীকে দেখে হাসিমুখে বলে,
-শুনলাম আবার আরেক বাচ্চা সংক্রান্ত কেসে জড়িয়েছিস!বাচ্চাটা কিন্তু মাশাল্লাহ খুব সুন্দর! যাইহোক,শুরু থেকে কি কি হল বল।
নওশাবা এপর্যন্ত ঘটে যাওয়া সব বলে।
-আর কাকে কাকে এসব জানিয়েছিস?
-তুহিন,তুমি আর ডাঃ রুবিনা কে।
-ভাল।তুই পুলিশের কাছে যা।
-কিন্তু আপু আমার মনে হচ্ছে ভেজালটা অন্য কোথাও।পুলিশকে জানালে বরং আমি ঝামেলায় জড়াব।ঐ বাচ্চাটা কত সুন্দর দেখেছ?আমার ধারণা ভাল কোন পরিবারের।অবশ্য পুরোটাই আমার ধারণা পর্যন্তই,কোন প্রমাণ নেই।ঘটনা আমার এলাকায় হলেও কোন বাসার তা বুঝব কি করে?আর যারা করেছে এমন একটা কাজ,তাদের মিডিয়ার সামনে আনতেই হবে!
-সবকিছু নিয়ে এত মিডিয়ায় ঢুকিস না।তোদের মিডিয়া তো আরেক খেলা শুরু করবে!এই বাচ্চার পেছনে কে আছে সেটা বোঝা মুশকিল।প্রমাণ ছাড়া কিছুই হবে না। তার উপর এই বাচ্চা হাসপাতালে হয়েছে,নাকি ঘরে হয়েছে সেটাও বোঝা যাচ্ছে না।
-তাহলে?
-তোর না এক স্পাই আছে এলাকায়?সেই যে বললি,মহিলা সব বাসার সব খবর রাখে?
-হাহাহা!স্পাই না,বলো যে শার্লক হোমস! কার বাড়ির কোন কোণায় কি হয়েছে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে সব বের করে!
-ঐ মহিলাকেই কাজে লাগা।যে বাসার বাচ্চা এটা,নিশ্চয়ই তাদের মেয়ে প্রেগন্যান্ট ছিল,হোক বৈধ না অবৈধভাবে।তারা এখন বলবে যে,বাচ্চা মারা গেছে।এরকম সব পরিবারে নিশ্চয়ই দু একদিনের মাঝে বাচ্চা মরে নি,তাই না?!প্রেগ্ন্যাসি,বাচ্চা মরা,এগুলো খুব বেশি বাসায় হবে না নিশ্চিত থাক।সেই সূত্র ধরে হাসপাতাল কিংবা ধাইমা এদের ট্রেস করা যাবে।
-ভাল বলেছ তো!তুমি জোস আপু!লাভ ইউ!

নওশাবার কথামত রশ্নী ওর চেম্বার থেকে বেরিয়ে আসল নিজ এলাকায় যাবে বলে।যাওয়ার আগে বাচ্চটার কথা মনে পড়ল।একবার দেখে যাবে?বাচ্চাটার কথা বার বার মনে সুঁইয়ের মত খোচাচ্ছে।শেষ পর্যন্ত উলটো ঘুরে আবার বেবী ওয়ার্ডের ফিরে আসে।বাচ্চাটা খেয়ে দেয়ে ছোট্ট বিছানায় গুটিশুটি মেরে ঘুমাচ্ছে।আওর নিষ্পাপ মুখের দিকে রশ্নী এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।কেউ ওকে এখন দেখলে ভাববে ও বুঝি মোহগ্রস্ত হয়ে আছে।তবে এই মোহ বেশিক্ষণ থাকে না।নার্সদের আনাগোনায় রশ্নী দ্রুত হাসপাতাল থেকে বের হয়।অনেক কাজ ওর হাতে,আর সব দ্রুত করতে হবে।

পারুলের পুরো নাম এলাকার কেউ জানে না,জানার দরকার নেই।কারণ ওর একটাই নাম,পারুল ভাবী।ছেলে বুড়ো সবাই ওকে পারুল ভাবী বলে।এই ডাক শুনে শুনে তার নিজের ছেলে মেয়েরাও মাঝে মাঝে পারুল ভাবী বলে ফেলে।এই পারুল ভাবী হল কলকাতার ধারাবাহিক ৪০০ পর্বের নাটকের গোয়েন্দা ভাবীদের বাস্তব রূপ, যার হাতের নাগালে এলাকার সবার খবর থাকে।কোন গলিতে কার পেট  খারাপ,কোন মানুষের আত্মীয় হাসপাতালে কতদিন ভর্তি থাকবে,এসব তথ্য জানে।এটা এই মহিলার এক প্রকারের নেশা।তবে সে মানুষ হিসেবে রশ্নীর কাছে ভালোই।একা একা থাকে বলে মাঝে মাঝেই খাবার পাঠিয়ে দেয়।আর রশ্নীর যদি কোন তথ্যের প্রয়োজন হয়,তবে সেটা সবার আগে পারুল ভাবীই দিতে পারবে।রশ্নী তাই তার বাসায় এসে হাজির হয়।রশ্নীকে এমন অসময়ে দেখে ভীষণ খুশি পারুল।

-আরে আমাদের সাংবাদিক আপা!কত দিন পর আসলে!সময় পাও না বুঝি?
-কি করব ভাবী,বুঝেনই তো!
-হুম!জানো গতকাল সাইফানের বাপ মা প্রায় ডিভোর্স হওয়ার মত অবস্থা!কারণ ওর বাপ ব্যস্ত থাকায় ওর মাকে সময় দেয় না।ভাবীও এজন্য একেবারে...!

রশ্নী হাসে।এই মহিলার অভ্যাস বদলাবে না।ড্রইংরুমে আরাম করে ফ্যানের নিচে বসতে বসতে বলে,
-শুনেছেন ভাবী আজ যে একটা বাচ্চা পাওয়া গেছে ময়লার মধ্য?
পারুল একেবারে পড়িমরি করে ছুটে আসে।
-কি বল?!বাচ্চা?সত্যিকারের বাচ্চা?
-হ্যাঁ,ময়লার মাঝে পাওয়া গেছে।দুই তিনদিন হবে বয়স।
-কি বলছ!দেশটা তো একেবারে শেষ!এও দেখার বাকী ছিল?!বাচ্চাটা কি বেক্বচে আছে?পরিপূর্ণ বড় বাচ্চা,নাকি ছোট?ওকে পেল কে?
-জানি না ভাবী,তবে পেয়েই পুলিশ ডেকেছে।বাচ্চাটা পরিপূর্ণ,আর ভালোই আছে।তবে ময়লার মধ্যে ছিল বলে
- কার বাচ্চা কিছু জানতে পারছ??
-সেটাই প্রশ্ন!কার বাচ্চা এটা বুঝতেই পারছি না।কেউ তো কিছু বলছে না।আবার কার বাসায় কিছুদিনের মাঝে বাচ্চা হয়েছে সেটাও জানি না।ভাবী,আপনি কিছু জানেন?
-না গো,আমি তো কিছু শুনি নি!কারও বাচ্চা হবে অথচ আমি জানি না,তা কি হয়?মনে করো শিকদারদের ছোট বৌ,বড় বৌ দুজনেই প্রেগন্যান্ট, কিন্তু ওদের তো ডেলিভারীর সময় হয় নি!আবার পাশের গলি আব্দুল্লাহর মা আছে না?তার তো আবার বাচ্চা হবে!চার বাচ্চা হওয়ার পরও এনার্জী কত দেখ!
-ভাবী,আপনি একটু দেখেন তো আশেপাশের কেউ এই কাজ করেছে কিনা। যে ফেলে গেছে,তাকে কেউ না কেউ তো দেখার কথা!
-হুম!আমি তোমাকে জানাব কল দিয়ে।এমন কাজ কে করল!!

পারুলের কানে এই গরম খবর দিয়ে রশ্নী নিশ্চিন্তে বেরিয়ে আসে।আজ বা কালের মাঝে খবর চলে আসবে,যদি সেটা এই এলাকার হয়!আর যদি বাইরের হয়?তখনেরটা তখন দেখা যাবে।তবে আপাতত পুলিশের কাছে না যাওয়াই ও ঠিক মনে করছে।একবার ভাবল অফিসে যাবে,আবার মনে পড়ল বাসায় কিছু কাজ আছে।লিফট থেকে নেমে ফ্ল্যাটের সামনে গিয়ে লক্ষ্য করল ওর চাবি ঘোরানীর নবের আশেপাশে অনক ঘষাঘষির চিহ্ন। কেউ কি দরজা খোলার চেষ্টা করেছিল??রশ্নী ঝট করে আশেপাশে তাকায়,কোথাও কেউ ঘাপটি মেরে নেই তো?! দরজায় চাবি লাগিয়ে স্বাভাবিকভাবেই দরজা খোলে দ্রুত ঢুকে পড়ে।অন্ধকারে হাতড়ে হাতড়ে আলো জ্বালায়।ঘরের সব ঠিকঠাক।তবুও সাবধান হতে রশ্নী বেডরুমের আলমারীর কাপড়ের নিচ থেকে লাইসেন্স করা পিস্তলটা বের করে।পিস্তল হাতে এক এক করে তিনটে ঘর ঘুরে বেড়ায়।নাহ,কোথাও কেউ নেই।ভালো করে জানালাগুলো চেক করে,সেখানে জোর পূর্বক জানালা খোলার কোন চিহ্ন নেই।তবে কি।শুধু দরজাই খুলতে চেষ্টা করেছে?কে এটা?কি চায়?ও কি এখন আর নিরাপদ?

রশ্নী ফোন তুলে,মাশরুককে কল দিবে।উনি বনানী থানার এস আই।পুলিশকে না জানালে আর হচ্ছে না বোধহয়।

চলবে...

লেখনীতে, #Abiar_Maria

Bạn đang đọc truyện trên: Truyen2U.Pro